জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি
জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি? এ বিষয়ে জানতে হলে আপনাকে প্রথমে জলাতঙ্ক রোগ সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। আপনি যদি জলাতঙ্ক রোগ সম্পর্কে জানতে পারেন তাহলে জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি? তা সহজেই বের করতে পারবেন। আজকের এই আর্টিকেলে জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি? সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি? তা জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
সূচিপত্রঃ জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি
- জলাতঙ্ক রোগের কারণ
- জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ
- জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি
- জলাতঙ্ক রোগের চিকিৎসা
- জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের উপায়
- আমাদের শেষ কথা
জলাতঙ্ক রোগের কারণ
জলাতঙ্ক রোগের সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত। আমাদের মধ্যে অনেকেই জলাতঙ্ক রোগের নাম শুনে থাকবে কিন্তু জলাতঙ্ক রোগের কারণ সম্পর্কে জানা নেই। যেহেতু জলাতঙ্ক রোগ একটি মারাত্মক রোগ তাই জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি? তা জানার আগে আমাদেরকে জলাতঙ্ক রোগের কারণ সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ এসএসসি পাশে পার্ট টাইম জব
জলাতঙ্ক রোগ হলো একটি ভাইরাস জনিত রোগ। ভাইরাস জনিত কারণে এই রোগ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত এ ভাইরাস বিভিন্ন ধরনের প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে গৃহপালিত প্রাণী অথবা বাড়ির আশেপাশে যে সকল প্রাণী আছে তাদের দ্বারা জলাতঙ্ক রোগ ছড়িয়ে পড়ে।
মানুষের মধ্যে জলাতঙ্ক প্রাণীর কামড়ে অথবা প্রাণের লালা থেকে ছড়িয়ে পড়ে। খামারের প্রাণী যেমন কুকুর, গরু, ছাগল খরগোশ, শেয়াল অথবা হায়েনা এ সকল প্রাণীর কামড় অথবা লালা মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগের ভাইরাস মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তাহলে আমরা বলতে পারি যে জলাতঙ্ক রোগের অন্যতম কারণ হলো প্রাণী।
জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ
কোনো মানুষকে যদি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত করে তাহলে জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। আপনি যদি কোন প্রাণীর সংস্পর্শে হন অথবা কোন মাংসাশী প্রাণী যদি আপনাকে কামড় দিয়ে থাকে তাহলে আপনার জলাতঙ্ক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে? জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ গুলো বিস্তারিত জেনে নিন।
জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণগুলো রোগের শেষ পর্যায়ে দেখা যায় না। এই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটি মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। জলাতঙ্ক রোগের প্রাথমিক উপসর্গ গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মাথাব্যথা করা, গলা ব্যথা, জ্বর এবং যেখানে প্রাণী কামড় দিয়েছে সেখানে খিচুনি অথবা জ্বালাপোড়া করা।
জলাতঙ্ক রোগের আরো কিছু লক্ষণ এর মধ্যে রয়েছে অত্যাধিক লালা নিঃসরিত হওয়া, খাবার অসুবিধা হওয়া, পানি গিলতে অসুবিধা হওয়া যার কারণে পানির ভয়, উদ্যোগ বিভ্রান্তি সহ আরো বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। জলাতঙ্ক রোগের রোগী একটুতে ভয় পেতে থাকে। সাধারণত এই লক্ষণগুলো জলাতঙ্ক রোগের ক্ষেত্রে প্রকাশ পায়।
জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি
জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি? এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই। জলাতঙ্ক রোগ হলো একটি মরণব্যাধি রোগ। যদি সঠিক সময়ে এ রোগের চিকিৎসা করা না হয় তাহলে অনেক সময় মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে রোগীর। তাই যদি কোন প্রাণীর কামড় অথবা লালা সংস্পর্শে হয় তাহলে দ্রুত এর চিকিৎসা ব্যবস্থা করে নিতে হবে। চলুন জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি? তা জেনে নেওয়া যাক।
জলাতঙ্ক রোগের ভাইরাস ক্ষতস্থান থেকে খুব দ্রুত মস্তিষ্কের মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পারে। যার ফলে রোগীর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায়। তার মধ্যে অসংলগ্ন আচরণ অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা, দৈনন্দিন কাজ করতে না পারা অতিরিক্ত উত্তেজনা শ্বাসকষ্ট এ ধরনের লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে। জলাতঙ্ক রোগের সব থেকে বিশেষত্ব হচ্ছে পশু কামড়ানোর পরেও এই রোগের টিকা দেওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ রকেট থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
অন্যান্য যে কোন রোগের ক্ষেত্রে সাধারণত এটা প্রযোজ্য নয়। হেপাটাইটিস বি এর সংক্রমণ হওয়ার পর টিকা দিলে কোন ধরনের সুবিধা পাওয়া যায় না। জলাতঙ্কের ভাইরাসের সৃষ্টিকাল দীর্ঘ হলে পরবর্তীতে দেওয়া যায়। সাধারণত পূর্বে কুকুর কামড়ালে সেই কুকুরকে দশ দিন পর্যবেক্ষণ করতে হয় এবং দশ দিনের মধ্যে কুকুরটি মারা না গেলে টিকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই কিন্তু এটা সম্পূর্ণ একটি ভুল ধারণা।
চিকিৎসকরা বলে থাকে কুকুর কামড়ানোর পরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকা দিতে হবে এবং চিকিৎসা শুরু করতে হবে। পূর্বে নাভিতে ১৪ টি ইনজেকশন দিতে হতো। এখন চারটি দিলেই হয়। কিন্তু কুকুর কামড়ানো ছাড়াও আগে থেকেই সতর্কতা হিসেবে ইঞ্জেকশন দেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে তিনটি ইনজেকশন দিলেই যথেষ্ট।
জলাতঙ্ক রোগের চিকিৎসা
জলাতঙ্ক রোগের চিকিৎসাএই রোগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগী মারা যায়। কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে না। উপশমমূলক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়। এই রোগের টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। র্যাবিস প্রাণী কামড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিকা নিলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ মারাত্মক রোগ জলাতঙ্ক রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখা উচিত।
প্রথমে আমাদেরকে এটি প্রাথমিক চিকিৎসা করতে হবে। যদি কুকুরের কামড় এর কারণে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই যেখানে কামড়েছে সেই জায়গাটা ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই টিকা দিতে হবে। সেই জন্য সেই ব্যক্তিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেডিকেলে নিয়ে যেতে হবে।
প্রাণে কামড়ের যদি সে ব্যক্তির মধ্যে রেবিসের উপসর্গের ইঙ্গিত পাওয়া যায় তাহলে চিকিৎসক অবিলম্বে প্রতিরোধী চিকিৎসা শুরু করে দেবে। রেবিস প্রতিরোধ ইঞ্জেকশন দিয়ে এর চিকিৎসা করা হয় যাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো বেশি বৃদ্ধি পায়। ১৫ দিন ধরে পরপর এই ধরনের ৫ টি ইনজেকশন দেওয়া হয়। চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় অবশ্যই সর্তকতা হবে নজর রাখতে হবে।
জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের উপায়
জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি? সে সম্পর্কে জানা হলে আমরা জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কেও জানতে পারবো। এই রোগ প্রতিরোধের উপায় হলো টিকা নেওয়া। এই ভাইরাসের অনেক রকম টিকা আবিষ্কার হয়েছে। সবচেয়ে নিরাপদ টিকা হলো হিউম্যান ডিপ্লয়েড সেল ভ্যাকসিন। এছাড়া এসব প্রাণী থেকে আমাদেরকে দূরে থাকতে হবে।
অন্যান্য টিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সেল ভ্যাকসিন, ডাক ইমব্রিও সেল ভ্যাকসিন, নার্ভ টিস্যু ভ্যাকসিন ইত্যাদি। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আগে টিকা নেওয়াকে প্রি-এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস ও আক্রান্ত হওয়ার পরে টিকা নেওয়াকে পোস্ট-এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস বলে। যে সকল প্রাণীর দ্বারা জলাতঙ্ক রোগ ছড়িয়ে পড়ে সে সকল প্রাণী থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে।
আমাদের শেষ কথাঃ জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি
প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের উপায়, জলাতঙ্ক রোগের চিকিৎসা, জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায় কি? জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ, জলাতঙ্ক রোগের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যেহেতু এটি একটি মারাত্মক রোগ তাই আমাদের সকলের এ বিষয়গুলো জানা উচিত।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা
আপনি যদি উক্ত বিষয়টি না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন। এই রোগ থেকে বাঁচার জন্য অবশ্যই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ। ২০৭৯১
ফ্লোনেস্ট বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url