স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে
স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে এই প্রশ্নটি অনেকেই করে থাকেন। কিন্তু অনেকেই সুস্পষ্টভাবে জানেন না যে স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবেন কিনা। তাই আপনাদের সকলের এ ব্যাপারে অস্পষ্টতা দূর করার জন্য এই পোস্টে আমরা স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে কিনা এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব। সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
রক্তদানের ক্ষেত্রে রক্তের গ্রুপ বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক রক্তের গ্রুপের ব্যক্তি আরেক রক্তের গ্রুপের ব্যক্তিকে রক্ত দিতে পারেনা। এক্ষেত্রে স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে কিনা এ ব্যাপারটিও সামনে চলে আসে। এই পোস্টটি পুরোটা পড়লে আপনারা স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে কিনা, স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে যা হয় ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবেন।
পোস্ট সূচিপত্র - স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে জেনে নিন
স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে যা হয়
স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হতে পারে কারণ আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষই পজেটিভ রক্তের গ্রুপের অধিকারী। তাই স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হওয়া নিতান্তই স্বাভাবিক ব্যাপার। স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হওয়া নিয়ে সমাজে অনেক ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে। এখন আমরা স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে যা হয় সে বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা অর্জন করব। স্বামী স্ত্রী উভয় রক্তের গ্রুপ যদি পজিটিভ অথবা উভয়ের রক্তের গ্রুপ যদি নেগেটিভ হয় তবে সুস্থ সন্তান জন্ম লাভ করে।
আরও পড়ুন: এসএসসি পাশে পার্ট টাইম জব
অনেকের মাঝে এমন ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে সন্তানের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে গর্ভজাত সন্তান পরিপূর্ণ পুষ্টি পায়। তাই এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয় না। অনেকে এটিও জিজ্ঞেস করে স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে। এই প্রশ্নটির উত্তরও এই পোস্টের পরবর্তী অংশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে?
অনেক সময় স্বামীর স্ত্রীকে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। রক্তের গ্রুপে মিল থাকার কারণে অনেক স্বামী ভালবেসে তার স্ত্রীকে রক্ত দিতে চান। সাধারণভাবে এক ব্যক্তির রক্তের গ্রুপের সাথে আরেক ব্যক্তির রক্তের গ্রুপের মধ্যে মিল থাকলে তারা একে অপরকে রক্ত দিতে পারেন। কিন্তু স্বামী ও স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ যদি একই হয় তারপরেও স্বামী স্ত্রীকে রক্ত দিলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। স্বামীর মধ্যে থাকা মাইনর অ্যান্টিজেন স্ত্রীর রক্তে প্রবেশ করতে পারে, যা পরবর্তীতে স্ত্রীর দেহে ওই এন্টিজেনের বিরুদ্ধে এন্টিবডি সৃষ্টি করে ফেলবে।
আরও পড়ুন: রকেট থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
উক্ত এন্টিবডি স্ত্রী দেহে বিদ্যমান থেকে যাবে এবং তা পরবর্তীতে প্লাসেন্টার মাধ্যমে গর্ভস্থ ভ্রুণের দেহে স্থানান্তরিত হবে। যা ভ্রুণের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কারণ পরবর্তীতে সেই মাইনর এন্টিজেনের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া এন্টিবডি বাহিরের শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করে তা মেরে ফেলতে চাইবে। এই এন্টিবডি একটা সময় দেহ থেকে বের হয়ে গেলেও তা বাচ্চা জন্মদানে সমস্যা সৃষ্টি করবে। এসকল কারণেই ডাক্তাররা স্ত্রীর জন্য স্বামীকে রক্ত দিতে নিষেধ করে থাকেন। আশা করি স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে কিনা তা বুঝতে পেরেছেন।
অসুস্থ অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে কি
স্ত্রীর অসুস্থতা জনিত কারণে অনেক সময় স্ত্রীকে রক্ত দেওয়ার জন্য স্বামী আগ্রহ প্রকাশ করে। এ সকল ক্ষেত্রে দেখা যায় স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ একই। তবে এক্ষেত্রে স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে? চলুন সে বিষয়ে ধারনাটি স্পষ্ট করি। ইসলামের দৃষ্টিতে অসুস্থ অবস্থায় স্ত্রীকে রক্ত দেওয়া জায়েজ রয়েছে। এতে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে অসুস্থ অবস্থায় স্ত্রীর রক্তের প্রয়োজন হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে অন্যকারো রক্ত দেওয়া যেতে পারে।
স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হওয়া সত্বেও স্বামী যদি স্ত্রীকে রক্ত দেয় তবে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যদি আপনি আপনার স্ত্রীকে রক্ত দান করে থাকেন তবে আপনার রক্তে উপস্থিত কোন এন্টিজেনের বিরুদ্ধে আপনার স্ত্রীর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যেতে পারে। এই অ্যান্টিবডি গর্ভফুল দিয়ে বাচ্চার শরীরে গিয়ে লোহিত রক্তকণিকা ভাঙতে শুরু করে। যা বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই অসুস্থ অবস্থায়ও স্বামী তার স্ত্রীকে রক্তদান না করাই উত্তম।
স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ কেমন হওয়া উচিত
স্বামী এবং স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এমন হওয়া উচিত যেন তাদের বিবাহ পরবর্তী জীবনে কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হয় এবং একটি সুস্থ সন্তান জন্ম লাভ করে। যেহেতু স্ত্রীর রক্ত নেগেটিভ এবং স্বামীর পজেটিভ হলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ পজেটিভ অথবা স্বামী স্ত্রীর উভয় রক্তের গ্রুপ একই হওয়াটাই একান্তভাবে কাম্য। আর এই পোস্টটির পূর্ববর্তী অংশ থেকে স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে কিনা এই বিষয়টি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন।
উপসংহার - স্বামী স্ত্রীর মাঝে রক্ত আদান প্রদান
প্রিয় বন্ধুরা! আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পরে আপনারা স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে, এ বিষয়টি সম্পর্কে সুস্পষ্ট একটি ধারণা অর্জন করেছেন। এছাড়াও স্বামী স্ত্রীর মাঝে রক্ত আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে কি কি ফ্যাক্টর কাজ করে তাও জেনে নিয়েছেন। আশাকরি এই পোস্টটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। তবে স্বামী কি স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে, এই ধরনের স্বাস্থ্য সতর্কতা বিষয়ক আরও নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট এর সাথেই থাকুন। @23891
ফ্লোনেস্ট বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url