সুন্নত কাকে বলে? সহজ ৫ টি সুন্নত আমল খুলে দেবে জান্নাতের দুয়ার

আল্লাহ সর্বশক্তিমান আধার । সকল শক্তি বা ক্ষমতা তারই হাতে সঞ্চিত আর সেই ক্ষমতা অর্জন করতে হলে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা অর্জন করতে হবে। অন্যথায় জীবন পদ্ধতির বাহির্ভুত কোন মানুষের পক্ষে কোন ক্রমেই সরাসরি এতবড় বিশাল শক্তিধর একক প্রতিপালকের অনুকম্পা অর্জন করা সম্ভব নয়। পার্থিব কোন মামলা মোকদ্দমায় সফলতা অর্জন করতে হলে যেমন উকিলের মাধ্যমে স্বীয় অভিযোগ বিচারকের কর্ণগোচর করতে হয়, অনুরুপ বিশ্বজগতের একক শক্তিধর স্বত্বার অনুকম্পা অর্জনেও তেমনি তারই নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমেই তা অর্জণ করা সম্ভব। তাই আমাদের মত সাধারণ মানুষের আবেদন আকুতি সেই মহান দরবারে পৌঁছাতে হলে সাধারণত প্রাথমিক একটি ধাপ অতিক্রমান্তেই তা করতে হবে। আর তা হলো প্রেরিত পুরুষ নবী মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ (সা.) এর সুন্নত এর মাধ্যমে ।

সুন্নত কাকে বলে? সহজ ৫ টি সুন্নত আমল খুলে দেবে জান্নাতের দুয়ার
পোস্ট সুচিপত্র

সুন্নত কাকে বলে? সহজ ৫ টি সুন্নত আমল খুলে দেবে জান্নাতের দুয়ার

সকল মানুষ স্রষ্টার সম্পর্কে অবহিত হবার পর তাকে পাবার একটি মাত্র পথ অবশিষ্ঠ আছে। আর তা হলো যেহেতু শেষ প্রেরীত পুরুষ একক স্রষ্টার পক্ষ থেকে মানব জাতীর মুক্তির জন্যে তারই অনুমোদিত নীতিমালা নিয়ে প্রেরিত হয়েছেন, কাজেই মানুষের জন্য তাদের জীবন চলার পথের যে সব কার্য্যক্রম উপকারী তার ও তিনি প্রবর্তন করে গেছেন। সেই সব কার্যক্রম বহির্ভুত মানুষ যা ইচ্ছা তাই একটা জীবনালেখ্য বেছে নিয়ে সেই মোতাবেক জীবনযাত্রা নির্বাহ করবে এটা কখনোই হতে পারে না। কারণ কোন অফিসারকে নিয়োগ প্রদানের সময়েই অফিসের নীতিমালাসমূহ তাকে অবহিত করা, তার বহির্ভূত অন্যকোন কার্য্যক্রম যেমন অননুমোদিত তথা দন্ডনীয়। অনুরূপ প্রেরিত পুরুষ হিসাবে প্রেরনের পুর্বাহ্নেই তাকে জীবন নির্বাহের সকল প্রক্রিয়া পরিজ্ঞাত কারানো হয়েছে, আর সেই প্রেরিত পুরুষের আমলে (সুন্নত) তার অনুসারী সকল বিশ্ববাসী মানুষকে তা মেনে নিতে হবে অন্যথায় তাদের জন্য অন্য কিছু গ্রহণ হবে দন্ডনীয় অপরাধ।

আরো পড়ুন: হালাল খাদ্য ও জিকির আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে কতটা জরুরী

তাই আসুন, কি ভাবে মুক্তির পথ প্রাপ্ত হওয়া যাবে তা জেনে নেই, প্রয়োজনে বিশ্ববাসী মানুষের জন্যে শেষ প্রেরীত পুরুষের প্রবর্তিত মানব জীবন নীতিমালার উপকারিতা সমূহ পরীক্ষার জন্যে স্বীয় জীবণে  তার প্রতিফলন ঘটাই।

সুন্নত মত আমল করা বিষয়ে আল্লাহর নির্দ্দেশ

বিশ্ববাসী মানুষের জন্যে শেষ প্রেরিত পুরুষ প্রেরণান্তে তার প্রবর্তিত কার্য্যক্রমকে মেনে নিতে হবে কি-না, সেই লক্ষে তিনি স্বীয় বানীতে ঘোষণা করেন। 

“মা আতাকুমুর রাসুলু ফাখুুজুহ ওয়ামা নাহাকুম আনহু ফানতাহু” (সুরা হাশর, আয়াত ৭) তোমাদের রসুল তোমাদের (জীবন যাত্রার) জন্য যা (আমার পক্ষ) থেকে আনায়ন করেছেন,  অনন্তর তা অবশ্যই তোমরা গ্রহণ করবে। আর তোমাদের (জীবন চলার পথে) যা নিষেধ করেন তা থেকে অবশ্যই বিরত থাকবে।

এখানে একক স্রষ্টার মহান অপ্রতিদ্বন্ধী কার্য্যকলাপের দ্বারা সাধারণ শিশু সুলভ জ্ঞান দ্বারা ও তাকে চিনে ফেলেছি, এমন ও তো দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেছে, অথচ স্রষ্টা বিষয়ক জ্ঞানে নিতান্ত ভ্রান্তির মধ্যে অবস্থান করেছে। এটা এক প্রকার তাদের জন্য উভলৌকিক দুর্ভাগ্যেরই পরিচায়ক। 

বলতে চাই স্বয়ং একক স্রষ্টাই ঘোষনা করেছেন আমার অনুকম্পা পেতে হলে আমার সর্বশেষ প্রেরিত পুরুষের কথা, কর্ম ও অনুমোদনকে তোমাদের জীবন চলার পথে স্বীকার করে না নিলে তোমারা আমার অনুকম্পালাভে কখনোই সক্ষম হবে না। কারণ আমি যে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ প্রেরণ করব তার জন্যে তো সুনিয়ন্ত্রিত লাইন বা সংযোগ থাকতে হবে। যেমন শক্তিশালী কারেন্ট হাউস থেকে আলো নিয়ে বাড়ীঘর অনুষ্ঠান আলোকিত করতে চাইলে ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে তা বাল্বের দ্বারাই পেতে হবে।অন্যথায় কারেন্ট হাউসে মহাকারেন্ট সঞ্চয় থাকলেও অনেক ইচ্ছে সত্বেও সেই আলো বাল্ব  ব্যতিত শুন্য ময়দানে আনায়ন করা যায় না। তেমনি আপনি যদি উভয় জীবনে সেই আলোরুপী আপনার একক নিয়ন্ত্রকের অনুগ্রহ লাভ করে ক্ষমা পেয়ে ধন্য হতে চান, তবে নিখুত একটি কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত বাল্বের অবশ্যই প্রয়োজন। 

ভিন্ন বাতিলকৃত ধর্মে থেকে ইসলামের উপকারী বিষয়গুলো স্বীয় জীবণে ছিটে ফোটা গ্রহণ করে উপকার লাভ করার ইচ্ছাটা চোরা লাইন গ্রহণের মাধ্যমে আলো প্রাপ্তির মত লজ্জাকর ব্যাপার। তাই মহামান্য পাঠক মহোদয় বলাবাহুল্য সেই কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত বাল্বটি হচ্ছে শেষ প্রেরিত পুরুষের আনায়নকৃত বা প্রবর্তিত উপকারী কার্যাবলী বা সুন্নত। আর এই যে কার্যাবলী বা সুন্নত, এটা শুধু নিছক খেয়াল বশতই প্রনয়ন করা হয়নি, যা মানব জাতির জন্য উপকারী, শুধুমাত্র তাই প্রণয়ন করা হয়েছে। কারণ যিনি কোন মেশিন তৈরী করেন, তিনি ভাল জানেন তার মেশিনে কোন তেল প্রয়োগ করতে হবে।বিকল্প তেল প্রয়োগে সে মেশিন ধ্বংশ হতে বাধ্য। 

সুন্নত কাকে বলে? সহজ ৫ টি সুন্নত আমল খুলে দেবে জান্নাতের দুয়ার

যাহোক এবার শেষ প্রেরীত পুরুষের মাত্র পাঁচটি সুন্নতের উপমা প্রয়োগ করে বিষয়টির সত্যতা প্রতিপাদন করছি।

আরো পড়ুন : তাসাউফ ও আত্মশুদ্ধি: মহান আল্লাহ তায়ালার গুনাবলী ও বিশালত্ব

সুন্নত কাকে বলে? সহজ ৫ টি সুন্নত আমল খুলে দেবে জান্নাতের দুয়ার


টুপী পরিধান (টুপি/পাগড়ী পরা)

মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি এই বিশেষ পদেই তাদেরকে পৃথিবীতে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। রাজা পদে বরিত হলে যেমন তার জন্য রাজা মুকুট পরিধান করা অপরিহার্য্য হয়ে দাড়ায়, তেমনি আল্লাহ কর্তৃক মানুষ অভিষেক প্রাপ্ত হয়ে পৃথিবীর রাজত্ব ভারের দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়েছে, অতএব তাকে অবশ্যই মুকুট বা টুপী পরিধান করে সেই পদের ভাবসাম্যতা রক্ষা করতে হবে। আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী মহোদ্বয় টুপী পরিধান করেন না। এটাই পদের  জন্য আঙ্গহানী স্বরুপ তথা দুভাগ্যের পরিচায়ক এর অসংখ্য উপকারীতার মধ্যে দু একটি  উপকারিতার কথা উল্লেখ করা হচ্ছে।

(ক) ইসলামী টুপি ও পাগড়ী শেষ প্রেরিত পুরুষের প্রবর্তিত স্রষ্টা কর্তৃক অনুমোদিত একটি নীতিমালা, এটি একটি হেকমতের  মোহর। (বাহ্যিক বা অভ্যান্তরীন)

(খ) যখনি সর্বদা টুপী মাথায় রাখা যায় এই মাথা সত্য জ্ঞানের ধারক ও বাহক হিসাবে যোগ্যতা অর্জন করতে থাকে। ফলশ্রুতিতে সকল সত্যের সুক্ষ অনুভূতি সে অনুভব করতে থাকে এবং নফসের প্রতারণা মুলক কাজে অগ্রসর হতে পারে না। সৎ বিবেক তাকে বাধাদান করতে থাকে তবে (জিকিরবিহীন টুপীধারী মুসলমানরা) নামাজ রোজা সত্বেও পুর্ণপরহেজগারী অর্জন করতে পারে না।

(গ) টুপী ব্যবহারী ব্যক্তির মানুষিকতার বিশেষ একটা আদবের সৃষ্টি হতে থাকে এই আদব নামক অনুভূতি তাকে অশ্লীল কাজে নিয়োজিত হতে অন্তরায় সৃষ্টি করে থাকে, আর এজন্যই অন্তত তিনি বাজে কাজে অগ্রসর হতে পারেন না। একটি টুপী, পাগড়ীধারী ব্যক্তি কি বাদ্যযন্ত্র, বাঁশী, নেশা, যেনা ইত্যাদি কাজে অগ্রসর হতে পারবে? একটা টুপীহীন ব্যক্তি যত সহজে নফসানী বা শয়তানী কাজে ব্রতী হতে পারে একটা টুপীধারী ব্যক্তি তত সহজে তা গ্রহণ করতে পারে না।

(ঘ) টুপি ব্যবহারকারী ব্যক্তি বেইজ্জতী থেকে রক্ষা পায়, যে ব্যক্তি সর্বদা তা ব্যবহার করে তার পার্থিব সম্পদ বৃদ্ধি ও পারলৌকিক সম্মানে ভূষিত হতে থাকে। তার সংসারে বরকত সৃষ্টি হতে থাকে (টুপী ও পর্দা বরকতের পরিচায়ক)। রাষ্ট্রপতি মুকুট বা পাগড়ীধারী হলে সেই বরকতে প্রজাগণ সুখে কালাতিপাত করে থাকে টুপীর বরকতে রাষ্ট্রীয় সংহতি বজায় ও আসমানি গযব মুসিবৎ থেকে সেই রাষ্ট্র অধিবাসীগণ সচরাচর ¯্রষ্টা কর্তৃক রক্ষা পেয়ে থাকে। দেশের অধিবাসীগণ তাদের পাপের কারণে যতটুকু গযব মুসীবৎ ভোগের যোগ্য হয়, কিন্তু টুপীর কারনে তা আংশিকভাবে হতে পারে।

(ঙ) টুপী সম্মানের প্রতীক, টুপীধারী ব্যক্তির আবির্ভাবে শয়তান পলায়ন করে ও দুষ্ট নফস সংকুচিত হয়। আপনারা কি লক্ষ্য করেনি? কোন টুপীধারী ব্যাক্তিকে দেখলে মুসলিম বা হিন্দু মহিলারা বে-আবরু থাকলে তারাতারি মাথায় কাপড় ও পর্দা করে নেয়। এছাড়া টুপির অসংখ্য উপকারীতা আছে যা স্থানাভাবে প্রযুক্ত হলো না।

সুন্নত কাকে বলে? সহজ ৫ টি সুন্নত আমল খুলে দেবে জান্নাতের দুয়ার


মেছওয়াক (দাঁত মাজা)

একক প্রভু আঠার হাজার মাখলুকাত বা সৃষ্টিকে একমাত্র তার প্রতিনিধি মানব জাতীর উপকার বা সেবার লক্ষে সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টির প্রতিটি বস্তুই মানুষের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এমন কি ছোট ছোট তৃণলতা, গুল্মরাশি ও মানব জীবনের উপাদান সম্পূরক হিসাব সৃষ্টি করা হয়েছে, যাতে করে সেই সব ছোট বড় বৃক্ষরাজী দ্বারা জ্বালানী আসবাবপত্র ও রসাদী দ্বারা সকল শ্রেণির ঔষধের মূল টিংচার প্রস্তুত হয়ে মানব জাতীর প্রভূত উপকার সাধন করতে পারে। এই সব জীবন রক্ষাকারী বৃক্ষ ও তদীয় ফল দ্বারাও মানুষ স্বীয় জীবন শক্তির অভাব পুরণে সক্ষম হচ্ছে আর সেই সব মহান প্রেরিত পুরুষদের দ্বারাই সকল বৃক্ষরাজির গুনাগুণ মানুষ অনুধাবণ করতে পেরেছে।

আরো পড়ুন : নারীদের চেয়ে পুরুষদের লজ্জা বেশি। কেন? প্রমানসহ জেনে নিন

দাঁত মানব দেহের একটি বিশেষ জরুরী অঙ্গ। এই অঙ্গ যাতে দীর্ঘস্থায়িত্ব লাভে মানক জীবনকে সুখদৃশ্য তথা সুখময় করতে পারে সেই লক্ষ্যে দন্ত ধারনের সুপ্রক্রিয়া হিসাবে বৃক্ষরাজির ডালদ্বারা তা পরিস্কারের ব্যবস্থা দান করা হয়েছে কারণ বৃক্ষের সাথে মানব দেহের বিশেষ সম্পৃক্ততা সৃষ্টি করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার নাম মেছওয়াক নিম্নে এর সংক্ষিপ্ত উপকারীতা বর্ণনা করা হল।

(ক) মেছওয়াক দ্বারা দাত মাজন করলে উত্তোরোত্তর দাতের জীবনী শক্তি বৃদ্ধি পেয়ে থাকে ফলে দাত দীর্ঘস্থায়ী হয়। 

(খ) বাল্যকাল থেকে মেছওয়াকের অভ্যাস সৃষ্টি করতে পারলে পাইওরিয়া, রক্তপাত ও মুখের দুর্গন্ধ দুরভীত হয়ে থাকে। এছাড়াও স্মৃতিশক্তি চোখের জ্যোতি মেছওয়াক ব্যবহারে অর্জিত হয় ।

(গ) মেছওয়াকের অভ্যাসে মুখে পাচক রসের সৃষ্টি হয়ে ক্ষুধা বৃদ্ধি ও অরুচি নাশ করে থাকে।

(ঘ) এছাড়াও মেছওয়াক ব্যাবহারকারী ব্যক্তি নামাজ আদায় করলে সেই নামাজে অধিক ছওয়াব প্রদান করা হয় ও মৃত্যু কষ্ট লাঘব হয়ে সহজ মৃত্যু নছিব হয়ে থাকে।


লবণ মুখে দেওয়া 

খাবার আগে লবণ মুখে দেওয়ার অভ্যাসে কমপক্ষে ৪৫টি রোগের নিরাময় নিশ্চয়তা সূচিত হতে পারে। পেটের পীড়া অরুচি জিহব্বার স্বাদ ও অন্যান্য অসংখ্য উপকার খাবার আগে লবণ মুখে দেওয়ার পদ্ধতির মাঝে নিহিত আছে।


লিঙ্গ ছেদন বা খাৎনা করা (পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ কাটা)

লিঙ্গের অগ্রভাগ খাৎনা পদ্ধতির মধ্যে মানব জাতীর অনেক উপকার সঞ্চিত আছে। এতে লিঙ্গের বিকাশ ঘটে পুর্ণ পরিনতিতে অগ্রসর হয়। চামড়া মোড়ানো লিঙ্গে নানাবিধ অসুখের সুত্রপাত হতে পারে। অগ্রচামড়া কর্তনে লিঙ্গমুন্ডে পরিহিত কাপরের ঘর্ষণে অতি শিহরণ বিনষ্ট হয়, নারী ভোগের সময় শিহরণ বিনষ্ট হবার কারণে অধিক উত্তেজনার হ্রাস ঘটায় ফলশ্রুতিতে অধিক বিলম্বে শুক্রপাত ঘটায় ও নারী তৃপ্ত থেকে দাম্পত্য জীবন সুখের হয়ে থাকে।

সুন্নত কাকে বলে? সহজ ৫ টি সুন্নত আমল খুলে দেবে জান্নাতের দুয়ার


বাবরী বা সুন্নতি চুল রাখা

বাবরী চুলরাখা মানব শরীরের সৌন্দর্য্য বর্ধক একটি মহাপ্রক্রিয়া এতে চেহারার ভারসাম্য বজায় ও সৌন্দর্য্যরে পরিস্ফুটন ঘটে। দেহ মনের ভারত্ব বৃদ্ধি পায়, মাথার ধীরতা ভাবের সৃষ্টি হয়। ব্যবহারে ধৈর্য্যরে উন্মেষ ঘটে। ধীশক্তি প্রবলতর হয়, বিলম্বে চুলের পক্কতা প্রাপ্তি ও বার্ধক্য বিলম্বিত হয়। ধর্মের ভারসাম্য তথা ইসলামের গৌরববৃদ্ধি পায়। লোক চক্ষে সে মাননীয় ও সকলের নিকট প্রভাব অক্ষুন্ন থাকে। কেউ সহসা তাকে অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে বিবেচনা করে না। কবরে মনকির নকীর ফেরেস্থাদ্বয় তার সাথে সমীহসুলভ ব্যবহার করে। স্বীয় স্ত্রীর নিকট প্রিয় পাত্র বলে বিবেচিত হয়। আল্লাহ তাকে সুন্নতে নববী ধারণের কারণে মর্যাদার অধিকারী করে থাকেন। দীনের খায়ের বরকত তার নছীব হয়। পক্ষান্তরে বাবরী না থাকলে দীনের অঙ্গহাণী হয়। ধর্ম বিষয়ক ভাব মাধুর্য্যরে আস্বাদন তিনি পরিপুর্ণ ভাবে অনুভব করতে সক্ষম হন না। বাবরী না রাখলে বার বার চুল কর্তণে চেহারার লাবণ্য ভারসাম্য ও জৌলুস বিনষ্ট হয়। বারংবার চুল কর্তণে চুলের জীবনী শক্তি বিনষ্ট হয়ে তারাতারি চুল পেকে যেতে থাকে। দেহে অতি সত্বরই বার্ধক্যের উন্মেষ ঘটে। পরিনামে অনেক উপকারিতা বাবরী বা সুন্নতী চুলে নিহিত আছে। 

শেষ প্রেরিত পুরুষ আজীবন বাবরী চুল রেখেছিলেন। চুল ছোট করে রাখা ইমামদের অনুমোদিত জায়েজ বটে কিন্তু তাতে সুন্নতের সওয়াব অর্জিত হয় না।

আরো পড়ুন : তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব: সকল ধর্মের উৎস কোথায়?

যা জানা প্রয়োজন

প্রিয় পাঠক প্রেরিত পুরুষের (মহানবী সা.) প্রবর্তিত কর্মকান্ডের (সুন্নতের) বিবরণ দিতে গেলে বিশাল একটি গ্রন্থের সৃষ্টি হতে পারে। তাঁর প্রবর্তিত নীতিমালার নির্ভুল উপকারমূলক আদর্শের সাথে কি অন্যান্য বাতিলকৃত ধর্মের নীতিমালা সমূহের কষ্মিনকালেও কোন তুলনামূলক উপকারীতার সামঞ্জস্য থাকতে পারে? তাই বেদ বাইবেল নির্দেশিত শেষ প্রেরিত পুরুষের প্রবর্তিত ধর্মের অনুসরণের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা নিছক কোন প্রকার খামখেয়ালী সুলভ নির্দেশ নয়। পরন্ত এটাই সমগ্র মানব মুক্তির একমাত্র সত্য সুনিশ্চিত ও সুনিয়ন্ত্রিত পথ।

অন্যান্য বাতিলকৃত ধর্মপ্রিয় লোকেরা হয়তো ভাবতে পারে আমাদের বাপদাদাদের ধারণকৃত ধর্মকে কিভাবে পরিহার করা সম্ভব? যুগের পরিবর্তণের সাথে সাথে আমাদের সামনে যদি পুরতন নীতিমালার চেয়েও কোন উন্নত ও আধুনিক একক আল্লাহ কতৃক নির্দেশিত কোন ধর্ম এসে পড়ে তাহলে কি আমাদের তা গ্রহণ করতে হবে না।

বর্তমান রাষ্ট্রপতির সংবিধান না মেনে প্রাক্তণ রাষ্ট্রপতির নির্দেশ মেনে কি রাষ্টদ্রোহির অপরাধে দন্ডিত হব? নতুন সিলেবাস না মেনে কি পুরাতন সিলেবাসে পরীক্ষাদান করে অকৃতকার্য্য তার স্বীকার হব? উন্নত স্কীমের আবাদ পরিত্যাগ করে কি সাবেক যুগের অনুন্নত আউষের আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্থ হব?

বিধায় আসুন, আমরা যাতে পার্থিব ও পারলৌকিক সত্য গ্রহণ করে কঠিন দোজখ থেকে মুক্তি পেতে পারি। পরিত্যক্ত ধর্মের মোহ মুক্ত হয়ে এবার তারই চেষ্টায় ব্যপৃত হয়ে পড়ি। 

উপসংহার : সুন্নত কাকে বলে? সহজ ৫ টি সুন্নত আমল খুলে দেবে জান্নাতের দুয়ার

প্রিয় পাঠক, লিখিত সুন্নত কাকে বলে? সহজ ৫ টি সুন্নত আমল খুলে দেবে জান্নাতের দুয়ার বিষয়ক পোস্টটি কবি সুধী মোজাম্মেল হকে এর ‘মানব জীবনের আয়না’ ধর্মতত্ত্বমূলক প্রবন্ধ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সম্মানীয় কবি সাহেবের “মানব জীবনের আয়না” ধর্মতত্ত্বমূলক প্রবন্ধটি ধারাবাহিকভাবে  এই সাইটের সাহিত্য মেনুতে প্রকাশ করা হয়। আপনি এমন তথ্যবহুল আর রহস্যজনক আরো পোস্ট পেতে আমাদের সাহিত্য পাতা থেকে ঘুরে আসতে পারেন। পোস্টটি ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে সেয়ার করুন। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফ্লোনেস্ট বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url