তাসাউফ ও আত্মশুদ্ধি: মহান আল্লাহ তায়ালার গুনাবলী ও বিশালত্ব

মহান স্রষ্টা বিষয়ক জ্ঞানের কোন শেষ নাই।  এই জ্ঞান যতোই জানতে থাকবেন ততই আরো বেশি জানতে ইচ্ছা করবে। তাসাউফ ও আত্মশুদ্ধি : মহান আল্লাহ তায়ালার গুনাবলী ও বিশালত্ব বিষয়ক পোস্ট টি স্রষ্টা সম্পর্কিত অতুলনীয় কিছু জ্ঞানের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। পুরো পোস্টটি পড়তে থাকুন আর মহান স্রষ্টার বিস্ময়কর কিছু তথ্য জেনে নিন।

তাসাউফ ও আত্মশুদ্ধি: মহান আল্লাহ তায়ালার গুনাবলী ও বিশালত্ব

পোস্ট সুচিপত্র

তাসাউফ ও আত্মশুদ্ধি: মহান আল্লাহ তায়ালার গুনাবলী ও বিশালত্ব 

শুধুমাত্র মুসলমানগণ ব্যতীত অন্যান্য ধর্মাবলম্বী লোকেরা স্রষ্টা বিষয়ক জ্ঞানে অত্যন্ত ভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে। তারা স্রষ্টাকে খেল-তামসার সামগ্রীর মতো যা ইচ্ছে তাই মনে করে মহা অপরাধে অপরাধী হচ্ছে। কেউ কেউ একক স্রষ্টার পরম শক্তিকে বহু বিকল্প শক্তিতে রুপান্তরিত করে ফেলেছে। খৃষ্টানরা তিন স্রষ্টার ইবাদত করেছে যথা আল্লাহ তার স্ত্রী মেরী ও মহান রাসূল ঈশা (আঃ) কে তার সন্তানের আসনে বসিয়েছে। হিন্দু মহোদয়গণ একক স্রষ্টার অনুসারী হলেও সেই শক্তিকে বিভিন্ন দেব-দেবী ও অবতারের শক্তিতে রুপান্তরিত করে ফেলেছে, ইয়াহুদীরা ওযায়ের (আঃ) কে স্রষ্টার পুত্রের আসনে বসিয়ে মহা অপবাধের যোগ্য হয়ে পড়েছে।

আরো পড়ুন : তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব: সকল ধর্মের উৎস কোথায়?

বস্তুত, তিনি (একক স্রষ্টা) সকল ক্ষমতার উৎস। তিনি কাউকে পরোয়া করেন না, করোও ধার ধারেন না, তিনি একক ও অংশীহীন তথা অভাব মুক্ত। সকল সৃষ্টির স্রষ্টা, সকল কার্যের নির্বাহক, একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী সকল বাদশাহের বাদশা সকল ইবাদতের যোগ্যতম স্বত্বা। স্ত্রী পুত্র পরিজন হতে বিমুক্ত সকল জীবের রিজিকদাতা, জীবিতকারী ও মৃত্যু দানকারী, বিচার দিবসের প্রভু, তিনি অতুলণীয়, অনুপম তিনি কারও দ্বারা জন্ম প্রাপ্ত নন বা কাউকে জন্ম দানও করেন নি। অচিন্তনীয়, অকল্পিত, সর্বময়, সর্বত্র বিরজিত, দোষমুক্ত, পবিত্র দাতা ও দয়ালু, একমাত্র উপাস্য শান্তিদাতা ইত্যাদি সকল অবিনশ্বর বিশাল গুণে তিনি গুনান্বিত।

তাসাউফ ও আত্মশুদ্ধি: মহান আল্লাহ তায়ালার গুনাবলী ও বিশালত্ব

মহান আল্লাহ তায়ালার গুনাবলী ও বিশালত্ব 

যাহোক, এবার একটি অভিযোগের বিষয় এই যে, মুসলিম জাতি ব্যতিত অন্যান্য সকল ধর্মাবলম্বীদের স্রষ্টা বিষয়ক জ্ঞান ও ধারণা অত্যান্ত সীমিত ও সংকীর্ণ। যার ফলে স্রষ্টাকে তারা সামান্য একটা এলাকার নিয়ন্ত্রক ও একটা সীমিত শক্তির আধার বলে মনে করে থাকে। নিম্নে একক মহান স্রষ্টার বিশাল শক্তির ও অপরিমাপ্য যোগ্যতাগুণের একটা চিত্র পাঠক সমীপে তুলে ধরা হলো যা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের পুজা বা স্রষ্টাদের পক্ষে নিয়ন্ত্রন করা কোন ক্রমেই সম্ভব নয়।

১) কুরশী, আরশ, লোহ, এসব একেকটা হতে আরেকটা দশ গুণ করে বিস্তৃত, তাহলে এসবের স্রষ্টা কিরুপ অতুলণীয় ক্ষমতার অধিকারী হতে পারে।

২) মহাশুণ্যে সাতটি আসমান সজ্জিত আছে পৃথিবীর এক বছরে একদিন হিসাবে একটা হতে আর একটার দুরত্ব ৫০০ বছরের পথ। তাহলে এসবের স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রনকর্তা কিরুপ বিরাট ও বিশাল তা সহজেই অনুমেয়।

৩) আলোর গতি সেকেন্ডে এক লক্ষ ছেয়াশী হাজার মাইল বৈজ্ঞানিকগণ বলেন, মহাশুন্যে এমন এমন দুরত্বের কতগুলো নক্ষত্র অবস্থান করছে যে, কোন কোন নক্ষত্রের আলো পৃথিবীতে পৌছাতে ৪-৫ বৎসর সময় লাগে। তাহলে সে সব কত কোটি মাইল দুরে অবস্থান করছে আর এগুলো যিনি নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন অথবা সৃষ্টি করেছেন সেই স্রষ্টা কত বিরাট ও অচিন্তনীয় ক্ষমতার অধিকারী? তাই তিনি একক অংশীহীন তথা সকল প্রভুর প্রভু।

আরো পড়ুন : তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব : মানব জীবনে ধর্মের ‍গুরুত্ব সম্পর্কিত তথ্যাবলী

৪) সামান্য একটি গর্তের মাটি কারও পক্ষে উত্তোলণ করা বা বহণ করা সম্ভব নয়। অথচ এ বিশাল পৃথিবীর অতল পরিধির বিশাল গুরুভারকে যে স্বত্বা এমন অবহেলে বহন বা নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন নিঃসন্দেহে তিনিই একমাত্র মহাশক্তিধর স্রষ্টা আর তিনিই আঠার হাজার সৃষ্টির প্রভু হবার যোগ্যতম স্বত্বা।

তাসাউফ ও আত্মশুদ্ধি: মহান আল্লাহ তায়ালার গুনাবলী ও বিশালত্ব


৫) জমিনের সর্বনিম্ন স্তরের নাম তাহতাচ্ছারা, আর তাহতাচ্ছারার নীচে কি আছে বা তা কিরুপ? এছাড়াও একটা দালানকে পৃথিবী ধরে নিলে তারপর একটা বাঁশঝাড়, তারপর কলাবাগান, তারপর একটা মাঠ এমনি ভবে একটার পর একটা আসতে আসতে পরিশেষে না হয় শেষই ধারণা করা হল। শেষের পর কি আছে আর তা কিরুপ? অতএব এইসবের স্রষ্টা একক প্রভু ছাড়া কারো পক্ষেই পরিমাপ করা সম্ভব নয়।

আরো পড়ুন : নারী সৃষ্টি রহস্য, পুরুষ বা স্বামীর মর্যাদা নারী হতে বেশি হবার কারণ কি?

৬) একই নাক মুখ সকল জীবের সামান্য জায়গায় অঙ্কিত। অথচ আজ পর্যন্ত কারও চেহারার সাথে কারও চেহারা মিল পরিলক্ষিত হয়নি। এই সুক্ষ্ন তুলিকার মারপ্যাচ তিনি ব্যতিত কারই পক্ষে সম্ভব নয়।

৭) মাতৃগর্ভে বা ডিমের ভিতরে একটা জীবিত ভ্রুন সংরক্ষণ করা ও তা নানান মুর্তিতে অঙ্কণ করে সামান্য মাতৃদ্বার দিয়ে নির্গত করা বিশেষ একটা কৌশলী হাতের ক্ষমতা ব্যতিত কারো পক্ষেই সম্ভব নয়।

যা হোক উপরোক্ত সংক্ষিপ্ত তথ্যের আলোকে একক মহান স্রষ্টার অপ্রতিদ্বন্দী ক্ষমতার একটা অতি সামান্য চিত্র জ্ঞাণী পাঠক সমক্ষে তুলে ধরা হল। এ তথ্যে আশা করি একটা শিশুরও বোধগম্যে আসবে যে, একক শক্তিধর স্রষ্টা ব্যতিত উল্লেখিত বিষয়দী নিয়ন্ত্রণ করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। কিন্তু যারা পথভ্রষ্ঠ তারা নফসের প্ররোচনায় ভুল পথেরই অনুসারী হয়ে থাকবে এটা বড়ই পরিতাপের বিষয়।

উপসংহার: তাসাউফ ও আত্মশুদ্ধি: মহান আল্লাহ তায়ালার গুনাবলী ও বিশালত্ব 

প্রিয় পাঠক, লিখিত তাসাউফ ও আত্মশুদ্ধি: মহান আল্লাহ তায়ালার গুনাবলী ও বিশালত্ব পোস্টটি কবি সুধী মোজাম্মেল হকে এর ‘মানব জীবনের আয়না’ ধর্মতত্ত্বমূলক প্রবন্ধ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সম্মানীয় কবি সাহেবের “মানব জীবনের আয়না” ধর্মতত্ত্বমূলক প্রবন্ধটি ধারাবাহিকভাবে  এই সাইটের সাহিত্য মেনুতে প্রকাশ করা হয়। আপনি এমন তথ্যবহুল আর রহস্যজনক আরো পোস্ট পেতে আমাদের সাহিত্য পাতা থেকে ঘুরে আসতে পারেন। পোস্টটি ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে সেয়ার করুন। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফ্লোনেস্ট বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url