তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব: সকল ধর্মের উৎস কোথায়?
ধর্মতত্ত্ব নিয়ে আমাদের জানার শেষ নাই। আমরা জন্ম থেকে যে ধর্মগুলো গভির শ্রদ্ধার সাথে পালন করে আসছি, এই ধর্মগুলোর উৎস কোথায়? অবশ্যই আমাদের জানতে ইচ্ছে করে? তাহলে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব : সকল ধর্মের উৎস কোথায়? বিষয়ের পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিন কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।
তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব: সকল ধর্মের উৎস কোথায়?
পৃথিবীর প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী হযরত আদম (আঃ) থেকেই পৃথিবীতে ধর্ম ও প্রেরিত পুরুষের উদ্ভব ঘটে সেই প্রথম মানুষের সন্তান সন্ততির সংখ্যা ছিল ৭২০ জন। তিনি একহাজার বছর বেঁচে ছিলেন ও স্বীয় সন্তান সন্ততির কাছে ধর্মের বাণী প্রচার করেন। তার মৃত্যুর পর তার দুই পুত্র হাবিল কাবিলের মধ্যে তাদের বৈবাহিক বিষয়ে দ্বন্দের সৃষ্টি হলে হাবিল একক প্রতিপালকের প্রতি অনুরক্ত ও তার প্রেরিত ধর্ম অনুস্বরণ করে চলেছিলেন। অপর পক্ষে কাবিল তেমন গুনে গুনান্বিত না হওয়ায় শয়তান কর্তৃক আক্রান্ত হয়ে নফসের প্ররোচনায় হাবিলকে হত্যা করে অপরাধী হয়ে পড়ে আর শয়তান তার একেশ্বরকে ভূলিয়ে দিয়ে স্রষ্টার প্রতীমা সৃষ্টি করে সেই প্রতিমাকে প্রাণের ভক্তি নিবেদন করার জন্যে উদ্বুদ্ধ করতে থাকে। এমননি অবস্থা থেকেই একত্ববাদ হতে অংশীবাদের সূচনা হয়।
যাহোক প্রথম প্রেরিত পুরুষ আদম (আঃ) ও বিশ্বের সর্বশেষ প্রেরিত পুরুষ বা শ্রেষ্ঠ মুণি হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) পর্যন্ত একলক্ষ চব্বিশ হাজার মতান্তরে ২ লাখ ২৪ হাজার প্রেরীত পুরষের সংখ্যা অবগত হওয়া যায় এবং সকলেই একক স্রষ্টা প্রদত্ত ধর্মগ্রন্থও লাভ করেছিল।
এতসংখ্যক প্রেরিত পুরুষ ও ১০৪ খানা ধর্মগ্রন্থের সংখ্যা এজন্যই হয়েছে যে, যুগের পরিবর্তনের সাথে মানুষের মানুষিক অবস্থার উন্নয়ন সভ্যতা ও রুচীর উন্নয়নের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে গিয়ে নতুন একজন প্রেরিত পুরুষ ও নতুন নীতিমালা সম্বলিত ধর্ম গ্রন্থের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিলো আর এমনিভাবেই এত এত সংখ্যক গ্রন্থ ও প্রেরিত পুরুষের সংখ্যা দাড়িয়েছে।
আরো পড়ুন : তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব : মানব জীবনে ধর্মের গুরুত্ব সম্পর্কিত তথ্যাবলী
তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব
এমনিভাবে যুগে যুগে হিন্দু, বৌদ্ধ, ইহুদি ও খৃষ্ঠান এইসব ধর্মগুলো সকলের জন্য পালনীয় বলে মনে করা হত। কিন্তু শেষ প্রেরীত পুরুষের প্রেরণে ও তার উপর অবর্তীণ ধর্মগ্রন্থের আবির্ভাবের পর হতেই পুর্বেকার সকল সন্মানিয় গ্রন্থের নীতিমালা ও কার্য্যক্রম বাতিল বলে গণ্য হয়ে যায়। একটা বাতিল হওয়া আইনকে ভালবেসে প্রাণপণে বুকে আকরে ধরার কোন প্রশ্নই আর অব্যহত থাকার কথা নয়।
উপমা স্বরুপ বলা যায় আগে যখন আয়ুর্বেদ ঔষধ ছাড়া অন্য কোন ঔষধের ব্যবস্থা ছিলনা তখন মানুষের আয়ুর্বেদ ঔষধের প্রতি একান্ত ভক্তিশ্রদ্ধা ও বিশ্বাস থাকার কারণে সেই সব ঔষধেই তৎকালীন সৃষ্ঠ রোগসমূহ নিরাময় হত। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে আধুনিক এলোপ্যাথিক ও হোমিও আবিষ্কারের পর আয়ুর্বেদের প্রতি ভক্তি শ্রদ্ধা ক্ষুন্ন হওয়ায় এখন আধুনিক রোগ ব্যাধিতে এই সব আধুনিক ঔষধই বেশী কার্যকরী। কাজেই যুুুুুগের পরিবর্তনকে মেনে নিতে হবে। আপনারা কি লক্ষ্য করেন না অনেক পৌরাণিক ধর্মের পূজার উপকরণগুলো প্রকৃতি আগের মতো যোগান দিতে পারছে না।
হিন্দু ধর্ম ছিল সবচেয়ে পুরাতন প্রায় ১০ হাজার বছর আগেরকার ধর্ম। এ ধর্ম ভারতীয় ধর্মনামে পরিচিত। হিন্দু ধর্ম থেকে বৌদ্ধ ধর্মের সুচনা ঘটে। হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্ম চলাকালিন সময়ে একক প্রভূকর্তৃক হযরত ঈশা (আঃ) বা যীশু খৃষ্ঠের মাধ্যমে বাইবেল বা ইঞ্জিল কিতাব অবতীর্ণ হয়। কিন্তু সুবিধাবাদী খৃষ্ঠান যাজকেরা স্বীয় সুবিধার প্রেক্ষিতেই গ্রন্থের নীতিমালাকে রদ-বদল করতে থাকলে এই গ্রন্থ ও এই ধর্ম বিকৃত হয়ে পড়ে ও তা মানুষের গ্রহণ উপযোগী হারিয়ে ফেলে।
এমনি ধর্মীয় দুরাবস্থায় একক স্রষ্টার পক্ষ থেকে পৃথিবীর শেষ প্রেরিত পুরুষের প্রতি শেষ ধর্ম গ্রন্থ আল-কোরআন অবতরণের মধ্য দিয়ে বিশ্বের সকল ধর্ম বাতিলের নোটিশ বা ঘন্টা ধ্বনী বেজে ছিল।
ঐতিহাসিক সভ্যতার ভিত্তিতে ৬৩২ খৃষ্ঠাব্দে সুদীর্ঘ ২৩ বৎসরে ৬,৬৬৬ টি অবতীর্ণ বাণীর সমন্বয়ে বিশ্ববাসী সকল মানুষের জন্য শেষ আসমানি গ্রন্থ আল কোরানেই একমাত্র বরণীয় ধর্মগ্রন্থ হিসাবে গন্য হয়ে যায়। প্রকাশ থাকে যে, একক স্রষ্টার বাণী বাহক স্বর্গীয় দূত হযরত জিব্রাইল (আঃ) মহান প্রভুর পক্ষ থেকে শেষ প্রেরিত পুরুষের নিকট প্রভুর বিভিন্ন নির্দেশসহ ২৪ হাজার বার আগমন করে এই ধর্মের পুর্ণতা দান করেন।
আরো পড়ুন : নারীরা এতো অবাধ্য কেন? আসল রহস্য জেনে নিন
সকল ধর্মের উৎস কোথায়?
প্রিয় পাঠক, বাস্তব চাক্ষুস ও সত্য ইতিহাসকে যারা মানে না, তারা কোন শিক্ষিত পদবাচ্য সম্প্রদায় কি-না তা অবশ্যই ভাববার বিষয়। একক স্রষ্টার সত্য-অস্তিত্ব একটা অবোধ শিশুর বোধগম্যে আসার কথা। কিন্তু পৌরাণিক বাতিলকৃত ধর্মের লোকেরা যদি একক স্রষ্টার প্রতি-ই বিশ্বাসী হতো তাহলে তিনিই যেখানে ঐতিহাসিক সভ্যতার ভিত্তিতে ৬৩২ খৃষ্টাব্দে বিশ্বের সর্বশেষ মহামুনি তথা সর্বশেষ প্রেরিত পুরুষের উপর বিশ্বের সকল মানুষের ধারণ উপযোগী করে সর্বশেষ ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন নাজিল করলেন তবে তা পরিত্যাগ করে বর্তমানে তারা কোন স্রষ্টার উপাসনা করে স্বীয় জীবন অতিবাহিত করেছেন। তাই বিষয়টি অনুধাবনের ভার জ্ঞাণী সম্প্রদায়ের অনুুুুধাবনের উপর ছেড়ে দেওয়া হলো।
এছাড়াও সর্বশেষ জ্ঞানের কথা হচ্ছে এই বিশ্বের স্রষ্টা যেহেতু একজন আর সকল মানুষ তারই তৈরী তা যদি সত্য হয় তবে একই পৃথিবীর অধিবাসীদের জন্য একটি ধর্ম ব্যতীত ক’টি ধর্ম থাকা স্বাভাবিক? অর্থ্যাৎ ধর্ম একটি থাকতে হবে। আর তা হতে হবে স্বয়ং স্রষ্টা অনুমোদিত। আর তা যে যুগেই হোকনা কেন একটি দেশে ফাষ্ট স্ট্যান্ড মাত্র একটি ছেলেই করতে পারে আর অনুমোদিত ধর্মমতও একটি থাকবে।
আরো পড়ুন : গত জীবনের ছুটে যাওয়া নামাজ কাজা আদায়ের নিয়ম
এখন হিন্দু, বৌদ্ধ, ইহুদী ও খৃষ্টান এই সব ধর্মের লোকেরা যদি বলে যে সেই স্ট্যান্ড করা একমাত্র ধর্মই হচ্ছে হিন্দু অথবা বৌদ্ধ অথবা খৃষ্টান এমনি ভাবে সকলেই তাদের ধর্মকেই স্ট্যান্ড করা একমাত্র ধর্ম মনে করে তবে তা যুক্তির নিকট টিকে থাকছেনা।
এজন্যই যে, ঐতিহাসিক জ্ঞান থাকলে তারা ভেবে দেখুক যে, ইসলাম, কোরান ও সর্বশেষ প্রেরিত পুরুষ মোহাম্মদ (সাঃ) কি-না আর তিনি যদি শেষ প্রেরীত হন তবে ইসলাম পৃথিবীর সর্বশেষ একমাত্র ধর্ম।
উপসংহার : তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব: সকল ধর্মের উৎস কোথায়?
প্রিয় পাঠক, লিখিত তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব: সকল ধর্মের উৎস কোথায়? পোস্টটি কবি সুধী মোজাম্মেল হকে এর ‘মানব জীবনের আয়না’ ধর্মতত্ত্বমূলক প্রবন্ধ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সম্মানীয় কবি সাহেবের “মানব জীবনের আয়না” ধর্মতত্ত্বমূলক প্রবন্ধটি ধারাবাহিকভাবে এই সাইটের সাহিত্য মেনুতে প্রকাশ করা হয়। আপনি এমন তথ্যবহুল আর রহস্যজনক আরো পোস্ট পেতে আমাদের সাহিত্য পাতা থেকে ঘুরে আসতে পারেন। পোস্টটি ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে সেয়ার করুন। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন।
ফ্লোনেস্ট বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url