চুল ও নখ কাটার ইসলামিক নিয়ম
আপনি কি চুল ও নখ কাটার ইসলামিক নিয়ম জানতে চান? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।এই পোস্টে চুল ও নখ কাটার ইসলামিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। চুল ও নখ কাটা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে চুল ও নখ কাটা জরুরী। আর কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক আজকের পোস্ট চুল ও নখ কাটার ইসলামিক নিয়ম।
পোস্ট সুচিপত্রপরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও চুল-নখ কর্তনের গুরুত্ব
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা শরীয়তের একটি বিশেষ বিধান। তাই প্রতিটি মুসলমান নর-নারীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা একান্ত প্রয়োজন।পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে শরীর ও মন ভালো থাকে। নিয়মিত চুল ও নখ কাটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার একটি অন্যতম অংশ। এবার চুল ও নখ কাটার ইসলামিক নিয়ম সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেয়া যাক।আরো পড়ুন : সুন্নত কাকে বলে? সহজ ৫ টি সুন্নত আমল খুলে দেবে জান্নাতের দুয়ার
চুল ও নখ কাটার সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ সময় কত দিন?
সর্বনিম্ন কতদিন পর পর চুল ও নখ কাটতে হবে এ ব্যাপারে কোন হাদিস খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে কিছু কিছু ফকীহগনের মতে, প্রত্যেক জুমা বারে চুল ও নখ কাটা মুস্তাহাব। কেউ কেউ আবার বলেছেন শুক্রবার জুমার নামাজের পূর্বেকার চুল নখ কাটা মুস্তাহাব। অনেকের মতে প্রতি বৃহস্পতিবার কাটা উত্তম। এই সকল মত গুলোর মধ্যে যেকোনোটি গ্রহন করা যেতে পারে। অন্যদিকে সর্বোচ্চ কতদিন পর পর চুল ও নখ কাটতে হবে এ ব্যাপারে কিছু হাদিস রয়েছে। আর সেগুলোর মধ্যে বলা আছে সর্বোচ্চ ৪০ দিন।
হযরত আনাস (রা) বলেন, গোঁফ খাটো করা বা চাঁচা, নখ কর্তন, বগল ও নাভির নিচের চুল পরিষ্কার করার কাজসমুহকে ৪০ দিনের বেশি সময় পর্যন্ত পার না করার জন্য এই উম্মাহকে সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।” (মুসলিম: ২৫৮)।
এই হাদিস থেকে বোঝা গেল চুল ও নখ কাটার সর্বোচ্চ সময় কত দিন। ৪০ রাতের বেশি এগুলো না কেটে বা না পরিষ্কার করে দিনাতিপাত করা জায়েয নেই।
চুল ও নখ কাটার ইসলামিক নিয়ম
নিয়মিত চুল ও নখ কাটা ইসলামের গুরুত্বপুর্ণ বিধান ও সুন্নত। চুল ও নখ কাটার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন নির্ধারিত নিয়ম বা দিবসেই কাটতে হবে সেরকম কোন শিক্ষা দেন নি। আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন বই বা গ্রন্থে নখ কাটার বিভিন্ন নিয়ম, সোজা দিক থেকে নাকি উল্টো দিক থেকে নখ কাটতে হবে, নিদ্দিষ্ট কোন নখ থেকে শুরু করা আর নিদ্দিষ্ট নখে শেষ করা, নিদ্দিষ্ট দিনে বা বারে নখ কাটা বা না কাটা ইত্যাদির ফযীলত বা ফলাফল বর্ণনা করা আছে। এই বই বা কিতাবগুলোর সবই পরবর্তী যুগের প্রচলিত নিয়ম। ফকিহ ও মুহাদ্দিসগণ একমত যে, চুল ও নখ কর্তন বিষয়ে যা কিছু প্রচলিত নিয়ম রয়েছে সবই বাতিল এবং বানোয়াট।
নখ কাটার জন্য এ রকম নিয়ম পালন করা সুন্নাত বিরোধী কাজ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নখ কাটতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে কোন বিশেষ নিয়ম বা বিশেষ অংশ বা বিশেষ দিন ব্যাপারে কোন শিক্ষা দেন নি। আর তাই যে কোনভাবে যে কোন দিন নখ কাটলেই এ নির্দেশ পালন করা হবে। কোন বিশেষ দিনে বা কোন বিশেষ পদ্ধতিতে নখ কাটার কোন ফযীলত কল্পনা করার অর্থ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর শিক্ষাকে অপূর্ণ মনে করা এবং তাঁর শিক্ষাকে পূর্ণতা দানের দু:সাহস দেখানো। আল্লাহ আমাদেরকে সহীহ সুন্নাতের মধ্যে জীবন যাপন করার তাওফীক প্রদান করুন।
অন্য ব্যাক্তিকে দিয়ে নখ-চুল কাটানো কি জায়েয?
গোঁফ বা মোচ খাটো করা বা চাঁচা, নখ কর্তন ও বগলের লোম পরিষ্কার করা অন্য যে কোন ব্যাক্তি বা নাপিতকে দিয়ে করানো জায়েয আছে। তবে কেবল নাভির নিচের লোম ব্যাতিত । একান্ত অপারগ হলে নাভির নিচের লোম একমাত্র নিজ স্ত্রীকে দিয়ে পরিষ্কার করানো যেতে পারে ।নখ ও চুল কাটা সংক্রান্ত কয়েকটি মাসআলা
১. নখ বা চুল কর্তনে ওযু বিনষ্ট হয়ে যায় না।
২. নখ কর্তনের পর আঙ্গুলের অগ্রভাগগুলো ধুয়ে নেয়া মুস্তাহাব।
৩. ওযু করার ধারাবাহিক নিয়মগুলোর সাথে কিয়াস করে ফকীহগণ বলেন যে, আগে হাতের এবং তারপরে পায়ের নখ কাটা উত্তম হবে। একইভাবে আগে ডান, তারপর বাম হাতের নখ কর্তন করাও উত্তম। একইভাবে আগে ডান পা ও সর্বশেষে বাম পায়ের নখ কাটা উত্তম।
৪. কোন কোন ফকিহ বলেছেন, শাহাদাত অঙ্গুল দিয়ে বান্দাগণ আল্লাহর একত্ববাদের স্বীকৃতি দিয়ে থাকে আর তাই এ আঙ্গুলটির নখ আগে কাটা ভাল। তবে এ ক্রমধারা আগে বা পরে হলে কোনরকম গোনাহ হবে না।
ফ্লোনেস্ট বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url