ইসলামে পবিত্রতা বলতে কি বুঝায়
আমার একক প্রতিপালক অনুপম। অতুলনীয় সমগ্র সৃষ্টির একমাত্র স্রষ্টা, তার সর্বশ্রেষ্ঠ গুণ হলো তিনি পবিত্র। তার পবিত্রতার সাথে অন্য কোন জিনিসের পবিত্রতা তুলনা হতে পারেনা। বস্তুত তিনি দু‘ভাবে পবিত্র। (ক) স্বত্বাগতভাবে ও (খ) স্ত্রী পুত্র পরিজন তথা সমগ্র অংশীবাদত্ব হতে পবিত্র।
পোস্ট সূচিপত্রইসলামে পবিত্রতা বলতে কি বুঝায় : দৈহিক পবিত্রতা
তিনি পবিত্র তাই পবিত্রতা ব্যতিত কোন কিছুই তিনি গ্রহণ করেন না। অপবিত্র কোন কিছু গ্রহণ করার ব্যপারে তিনি বাধ্যও নন। শুধু মাত্র আত্মীক ও দৈহিক পবিত্র জনেরাই তার নৈকট্য অর্জন করতে পারেন। পবিত্র জনকে তিনি বন্ধু হিসাবেও গ্রহণ করে থাকেন ও অবিচ্ছেদ্য ভাবে ভালবাসেন। তাই কেউ যদি প্রকৃত অর্থেই একক প্রভুকে পেতে চায় তবে নিজেকে পবিত্র করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় শেষ প্রেরিত পুরুষের প্রবর্তিত নীতিমালা বহির্ভিুত কোন ক্রমেই কেউ পবিত্রতা অর্জনে সক্ষম হবে না।
আরো পড়ুন : তুলনামুলক ধর্মতত্ত্ব: ইসলাম একটি স্বাভাবিক ধর্ম
পবিত্রতা অর্জনের উপায় ও পবিত্রতা অর্জনের গুরুত্ব
প্রকাশ থাকে যে একক প্রভুর মহান নামের স্বরণ ও তার অনুমোদনই পবিত্রতা লাভের মুল বিষয়। তাকে স্বরণ করে সামান্য কিছু পানি অথবা পানি অভাবে সামান্য একটু পবিত্র মাটির মাধ্যমেই পবিত্রতা নামক মহামুল্যবান একটি নৈকট্য শক্তি অর্জন করা যায়। যেমন এক সীট কাগজে কোন উর্ধোতন ব্যক্তির স্বাক্ষর গ্রহণ করলেই সেটি মুল্যবান বলে গণ্য হয় ও তার দ্বারা অনেক কাজ করা যায়। তেমনি পবিত্র মাটি বা পানির মাধ্যমেই তার অনুমোদন ও নাম স্বরণের মাধ্যামেই তার ইবাদত বা যে কোন মহান কাজের যোগ্য বলে গন্য হওয়া যায়।
বস্তুত মানুষ নাপাক জিনিস দ্বারা তৈরী। সে কোন ক্রমেই স্বেচ্ছাকৃত ভাবে পবিত্র হতে পারেনা। অথচ পবিত্রতা অর্জন না করলে তাকে পাবার বা যোগ্যতা অর্জন করার কোন প্রক্রিয়া নেই। তাই এই অপবিত্র দেহকে সর্বাঙ্গীন ভাবে পবিত্র করে প্রভুর মিলন ও তার পবিত্র নাম উচ্চারণ তথা সেই বিশাল স্বত্বার ইবাদত বা উপাসনার জন্য অজু নামক একটি অনুমতি ও তার অনুমোদন সূলভ একটি প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে হবে। এই প্রক্রিয়া ব্যতিত কেউ কখনো পবিত্র বলে গণ্য হতে পারেনা।
পবিত্রতা অর্জনের সাধারণ নিয়ত
যেমন তাকে এ কথা বলা অবশ্যই প্রয়োজন যে, প্রভু সকল প্রসংশা তোমার জন্য, অপবিত্রতা নিরশনের লক্ষ্যে তোমার ইবাদতে অংশগ্রহনের জন্যে, তোমার নৈকট্য অর্জনের প্রয়োজনে, অজু করে বা গোসল করে পবিত্র হচ্ছি।
আরো পড়ুন : দুনিয়ার মহব্বত সমস্ত গুনাহের মূল
এই পবিত্রতার নিয়ত ব্যতিত কেউ যদি সাত সাগরের সকল পানিও দেহে সিঞ্চন করে আর তাকে স্বরণ না করে থাকে তবে সে সারা জীবন ধরে অপবিত্র থাকতে বাধ্য। তাই দেখা যাচ্ছে পবিত্রতা অর্জনের নিয়তের প্রয়োজন আর সেই বিশেষ প্রক্রিয়া ইসলাম ব্যতিত অন্য কোন ধর্মে উপস্থিত নেই। আর সে জন্যই মুসলিম ব্যতিত অন্য কোন জাতি-ই পবিত্র বলে গন্য নয় বা গন্য হতে পারে না।
আত্মীক পবিত্রতা
যাহোক দৈহিক পবিত্রতার প্রক্রিয়া সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করা হলো। এবার আত্মীক পবিত্রতার প্রয়োজন। আত্মীক পবিত্রতা অর্জন করতে গেলে একক প্রভুর একত্ববাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাই একমাত্র শর্ত। কারণ অংশীবাদ (শিরক) হৃদয় অপবিত্র। এই অংশীবাদ হৃদয়ের দ্বারা কোন ক্রমেই কারো মুক্তি সূচিত হতে পারেনা। যখনই কেউ একক প্রভুর একক স্বত্বাকে স্বীকার করে নিয়ে তাকেই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী বলে মনে করে নিবে তখনেই সে আত্মীক পবিত্রতা অর্জন করবে।
এ প্রসঙ্গে একক প্রতিপালক স্বীয় মহান বাণী দ্বারা তিনি ব্যতিত অন্য কোন মুর্তি জাতীয় উপাস্য গ্রহণকারীদেরকে বলেন “ফাজতা নেবুর রেজছা মিনাল আওছান ওয়াজতানেবু কাওলা-ঝুর” (সুরা হজ্ব, আয়াত-৩০) “অনন্তর তোমার অপবিত্রতা হতে তথা মুর্তিসমূহের উপাসনা হতে বিরত থাকো এবং মিথ্যে কথা হতেও দুরে থাকো”।
মহান একক স্রষ্টার পবিত্র বাণীপাকের আলোকে অনুভব করতে পারা গেল যে, অংশীবাদ অন্তর অপবিত্র, অন্ধকারাচ্ছন্ন ও মৃত। তাই আত্মীক পবিত্রতার একান্ত প্রয়োজন। তাই আসুন মনের সকল সংকীর্ণতা, সকল গ্লানি ও সেই কুচক্রী নফসের সকল চক্র ভেদ করে একক মহান স্রষ্টাকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এবং দৈহিক ও আত্মীক পবিত্রতা অর্জন করে পরলোকের কঠিন আজাব হতে মুক্তির পথ বেছে নেই।
আরো পড়ুন : চুল ও নখ কাটার ইসলামিক নিয়ম
পরিশেষে এ আবেদন ও জ্ঞাপন করছি যে, সকল ভ্রান্তি পুর্ণ সেই সকল পৌরানিক মতবাদ পরিহার করে আমরা সকলেই সেই একক সত্য স্রষ্টাতে বিশ্বাস স্থাপন করি ও আত্মীক পবিত্রতা অর্জন করে পরলোকে মুক্তির সনদ প্রাপ্ত হই।
ফ্লোনেস্ট বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url