আলকুশি বীজের উপকারিতা

যেকোন ধরণের যৌন রোগ সারাতে আলকুশি বীজের উপকারিতা প্রচুর। যৌন দুর্বলতা বা শারীরিক দুর্বলতায় প্রাচীনকাল থেকে ভেষজ চিকিৎসায় আলকুশি ব্যবহার হয়ে আসছে। পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পরে আলকুশি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য ও এটি দিয়ে প্রস্তুত করা যায় এমন ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

আলকুশি বীজের উপকারিতা
পোস্ট সূচিপত্র

আলকুশি বীজের উপকারিতা

পুরুষের বা ছেলেদের ধ্বজভঙ্গ, মেহ, প্রমেহ, শারীরিক দুর্বলতা, পাতলা বীর্য ঘন করা, দীর্ঘ ক্ষণ সহবাস করার ক্ষমতা অর্জনসহ যাবতীয় যৌন রোগ সারাতে আলকুশি বীজের উপকারিতা রয়েছে। এটি খুবই সহজ লভ্য তাই এটি দিয়ে ঔষধ প্রস্তুত করতে তেমন বেগ পেতে হয় না। যেকোন ধরনের যৌন রোগের চিকিৎসা যেখানে সেখানে না করে যৌন রোগের প্রাকৃতিক ভাবে সমাধান করা শারীরিক, মানুষিক ও আর্থিক সব দিক দিয়ে ভাল। এই পোস্টে আলকুশি গাছের পরিচয়, জন্মস্থান আলকুশি বীজ কোথায় পাওয়া যায়? আলকুশি বীজ খাওয়ার নিয়ম ও এর অভাবনীয় কার্যকরিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

আরো পড়ুন : শিমুল গাছের মূল খেলে কি হয়?


আলকুশি গাছের পরিচয়

বাংলায় আলকুশি, হিন্দিতে কেঁওয়াজ, ইংরেজীতে Devil Bean নামে পরিচিত এই গাছটি আসলে বর্ষজীবী ও লতানো উদ্ভিদ। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এবং প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশের জন্য গাছটি কয়েক বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। পুরো পৃথিবীতে গরম প্রধান অঞ্চলগুলোতে আলকুশির প্রায় বিশটি প্রজাতি রয়েছে তবে বাংলাদেশে প্রায় আট থেকে দশটি প্রজাতী দেখতে পাওয়া যায়।

এই লতানো গাছটির পাতা দেখতে অনেকটা মিষ্টি আলুর পাতা সদৃশ্য। একটি পাতার বোটায় তিনটি করে পাতা থাকে। পাতার আকৃতি কিছুটা পান পাতার মতো। বেশ বড় হয় সমস্ত পাতা সরু লোমে ঢাকা থাকে। 

আরো পড়ুন : রসুনের ইতিহাস সেক্সে রসুনের উপকারিতা কি

এই গাছের ফুলের বোটার মুখ সব সময় নিচের দিকে ঝোলানো থাকে। ফুল লম্বায় প্রায় ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি বড় হবে ফুলের রং গাড় বেগুনি রঙের। বর্ষার শেষে গাছে ফল ধরে। ফল দেখতে মোটামুটি সীমের মতো তবে একটি বোটায় একসঙ্গে অনেকগুলো ফল ঝুলে থাকে। ফলগুলো লম্বায় তিন ইঞ্চি পর্যন্ত হয় আর ফল কাঁচা অবস্থায় সাদা থাকে পাকার পর বাদামী রঙের হয়ে যায়। প্রতিটি ফলের গায়ে ও সরু লোম দিয়ে আবৃত থাকে। ফল পেকে বাদামি রং ধারন করলে লোমগুলো উঠে যেতে শুরু করে আর বাতাসে উড়ে বেড়ায়। আলকুশি বীজের লোম মানুষের জন্য খুবই ক্ষতিকর শরীরের কোথাও লাগলে চুলকাতে থাকে।

আলকুশি বীজের উপকারিতা


আলকুশি বীজ কোথায় পাওয়া যায়

আমাদের দেশের গ্রাম অঞ্চলগুলোতে ছোট বড় জঙ্গলে আলকুশির বীজ পাওয়া যায়। গ্রাম এলাকায় অনেকেই এটিকে বিড়াল চিমটি, শিয়াল কাঁটা, বানর ঝোলা বা বানরের ফল নামে পরিচিত। আলকুশির মতো সম্পূর্ণ একই রকম দেখতে একশ্রেণীর গাছ পাওয়া যায়। সেই গাছকে চেনার একমাত্র উপায় হল ফল দেখে। আলকুশির বীজের গা সরু লোমে ঢাকা থাকে, আর ওই গাছের ফলে কোন লোম থাকে না। যদিও কখনো দু চারটা লোম দেখা যায় সেটা শরীরে লাগলে চুলকায় না।

গ্রাম অঞ্চলের ঝোপে ঝাড়ে বা জঙ্গল থেকে অতি সাবধানে আলকুশি বীজ সংগ্রহ করা যেতে পারে। অথবা আমাদের দেশের ছোট বা বড় হাটে বাজারে ভেষজ ঔষধী দোকানগুলোতে আলকুশি বীজ ব্যপকভাবে পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন : হিন্দু ধর্মে সহবাসের নিয়ম - হিন্দু ধর্মে স্ত্রী সহবাসের নিয়ম

আলকুশি বীজের উপকারিতা


ধ্বজভঙ্গ রোগের স্থায়ী চিকিৎসা

পাঁচটি আলকুশি বীজ রাতে ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরের দিন সকালে বীজগুলোর খোসা ছড়িয়ে নিতে হবে। এরপর ১০০ মিলিলিটার পানি এবং ১০০ মিলিলিটার গরুর দুধ এক সাথে মিশিয়ে একটি স্টিলের পাত্রে খোসা ছাড়ানো বীজগুলোকে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর  বীজগুলোকে মিহি করে বেটে বা ব্লেন্ড করে নিয়ে সেগুলোকে খাঁটি গাওয়া ঘি দিয়ে হালকা করে ভেজে হালুয়ার মতো করতে হবে।

আলকুশি বীজের এই হালুয়াটি একবারে বেশি পরিমাণে তৈরি না করে তিন থেকে চারদিন খাওয়া যায় এমন পরিমানে তৈরি করে নেয়া ভাল। আর এই হালুয়া প্রতিদিন সকালে ও রাতে পাঁচ গ্রাম পরিমাণ ২০০ মিলিমিটার গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে হবে। এই হালুয়াটি খাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ফলাফল পাওয়া যায় তবে ধ্বজভঙ্গ রোগের স্থায়ী চিকিৎসায় এক মাস প্রতিদিন খেলে রোগ পুরোপুরি নিরাময় হবে।

আরো পড়ুন : গর্ভাবস্থায় সহবাসের সঠিক নিয়ম


বীর্য ঘন করার ঔষধ আলকুশি

পুরুষের বা ছেলেদের যৌবন বয়সে অতিরিক্ত হস্তমৈথুন ও খারাপ অভ্যসের ফলে বেশি পরিমান শুক্রক্ষয়ের জন্য বীর্য পাতলা হয়ে যায়। ছেলেদের বীর্য ঘন করার ঔষধ হিসেবে বা পাতলা বীর্য ঘন করার ঔষধ হিসেবে আলকুশি ব্যাপকভাবে পরিচিত।

চার থেকে পাঁচটি আলকুশি বীজ রাতে এককাপ গরুর গরম দুধে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে বীজগুলোর খোসা ছড়িয়ে নিতে হবে। এরপর সামান্য গাওয়া ঘি মিশিয়ে বীজগুলো হালকা করে ভেজে নিতে হবে। সেগুলো ঠান্ডা হলে এক চামচ চিনি মিশিয়ে দিনে একবার করে সেবন করলে তরল বীর্য ঘন হয়ে যাবে। এটি খুবই কার্যকরী ঔষধ, স্থায়ীভাবে বীর্য ঘন করতে কমপক্ষে ১৫ দিন এই ঔষধ খেতে হবে। ভাল ফলাফল পেতে এই ঔষধ খাওয়ার পর অবশ্যই ২০০-৪০০ গ্রাম গরম দুধ পান করতে হবে।


উপসংহার : আলকুশি বীজের উপকারিতা

প্রিয় পাঠক, আলকুশি বীজের উপকারিতা সম্পর্কিত পোস্টটি পড়ে নিশ্চই আপনি জানতে পেরেছেন আলকুশি গাছের পরিচয়, জন্মস্থান আলকুশি বীজ কোথায় পাওয়া যায়? আলকুশি বীজ খাওয়ার নিয়ম ও এর অভাবনীয় কার্যকরিতা হিসেবে ধ্বজভঙ্গ রোগের স্থায়ী চিকিৎসা এবং বীর্য ঘন করার ঔষধ আলকুশি ইত্যাদি সম্পর্কে। পোস্টটি ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে সেয়ার করুন আর কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফ্লোনেস্ট বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url