স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধি গাছ ও ঔষধ
স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধি গাছ সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মনযোগ দিয়ে পড়ুন আর জেনে নিন, অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ বন্ধ করার উপায় সহ স্বপ্নদোষ ও কু-অভ্যাসের ফলে বীর্য পাতলা হয়ে যাওয়ার ঔষধ ও ঔষধি গাছ সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রদীর্ঘদিন হস্তমৈথুন ও স্বপ্নদোষের পরিনতি
দীর্ঘদিন হস্তমৈথুন ও স্বপ্নদোষের পরিনতি খু্বই ভয়াবহ। দেহে যৌবন আসার সাথে সাথে কিছু ছেলে খারাপ অভ্যাস বা হস্তমৈথুনে লিপ্ত হয়ে পড়ে। ফলে তাদের বীর্য পাতলা হয়ে যায়। তাদের অনবরত কুচিন্তা, কুদৃশ্য বা খারাপ ছবি, ভিডিও এবং সেইসব খারাপ চিন্তাভাবনায় মনকে সম্পূর্ণ আচ্ছন্ন করে ফেলে। ফলে রাতে বা দিনের বেলা ঘুমের মধ্যে তারা ওইসব দৃশ্য স্বপ্নেও দেখে। ফলে ঘুমের মধ্যে পাতলা বীর্য সহজেই বের হয়ে যায়। আর এভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে এটি একটা রোগে পরিণত হয়। আর ধীরে ধীরে এই রোগ মারাত্মক ব্যাধিতে পরিণত হতে পারে। এই সব কুঅভ্যাস ও পর্ন ভিডিও দেখার ফলে বীর্য পাতলা হয়ে গেলে সেই সব ছেলেদের বা পুরুষের বিবাহিত জীবন সুখের হয় না এমনকি বিচ্ছেদ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। আর এই রোগের ফলে বীর্যে শুক্রানুর পরিমান কমে যায় আর বীর্যে শুক্রানুর পরিমান কমে গেলে সন্তান সন্ততি হয় না। সর্বপরি এটি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে।
আরো পড়ুন : ছেলেদের কাম শক্তি বৃদ্ধির ঔষধ শতভাগ কার্যকরী
স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধি গাছ
আমাদের আজকের পোস্টে স্বপ্নদোষ বন্ধ করার দুটি ঔষধি গাছ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। এই ঔষধগুলো কিভাবে সেবন করতে হবে তারও নির্দেশনা প্রদান করা হবে। গাছ দুটির নাম অশ্বগন্ধা ও শতমূলী। গাছ দুটির ঔষধের বর্ণনা দেওয়ার পূর্বে গাছের পরিচয় এবং প্রাপ্তিস্থান সম্পর্কে আপনাদের সামান্য ধারনা দেয়া যাক। প্রাচীনকাল থেকেই এই কাজ দুটি স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধি গাছ হিসাবে ব্যাপকভাবে পরিচিত। দেশে-বিদেশে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রে এই গাছ দুটির কদর মেলা ভার।
অশ্বগন্ধা : স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধি গাছ
অশ্বগন্ধা গাছকে ইন্ডিয়ান জিংসিং নামে ডাকা হয়। অশ্বগন্ধা বহুবর্ষজীবী গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এই গাছ ১ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়। এর শাখাগুলো গোলাকার এবং চারদিকে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকে। পাতাগুলো দেখতে লেন্স আকৃতির ডিম্বাকার হয়, ২ থেকে ৪ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা এবং আগার দিকটা সরু থাকে। সমস্ত পাতায় সাদা সরু লোম থাকে আর পাতার বোটা আধা ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। এর কান্ডের গঠন গোলাকার কিছুটা বেগুন গাছের মত, ফুল পাতার বোটার গা থেকে বের হয়। ফুল উভয়লিঙ্গ বিশিষ্ট আকারে ছোট বেশ নরম। ফুলের রং সবুজ আভাযুক্ত অথবা হলুদ রঙের ফুলও দেখা যায়। এর ফল কিছুটা মটরের দানার মত গোলাকার। পাকলে লাল রং ধারন করে। ফলগুলো আকারে ছোট আর উপরের আবরন মসৃণ ও চ্যাপ্টা হয়। অশ্বগন্ধা গাছের শিকড়ের রং কিছুটা সাদা।
আরো পড়ুন : আলকুশি বীজের উপকারীতা
প্রাপ্তিস্থান : অশ্বগন্ধা বাংলাদেশের উত্তরের জেলাগুলোতে খুব বেশি জন্মে। এছাড়া উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অশ্বগন্ধা জন্মাতে দেখা যায়। ইউরোপ থেকে আফ্রিকার বিভিন্ন এলাকায় এই গুল্ম প্রাকৃতিকভাবে জন্মাতে দেখা যায়। ভারতের হিমালয় পর্বতের শুষ্ক পাদদেশেও এটি জন্মায়। আজমিরের নিকটবর্তী নিমুচে এবং মধ্যপ্রদেশের মানষায় অশ্বগন্ধা ব্যপক চাষ হয়।
আমাদের দেশে ছোট বড় বিভিন্ন হাটে বাজারে আয়ুর্বেদিক ভেষজ ঔষধের দোকানগুলোতে অশ্বগন্ধার ডাল, পাতা ও এর গুড়ো পাওয়া যায়।
অশ্বগন্ধা গাছ দিয়ে প্রস্তুতকৃত স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধ
ঔষধ-০১: রাতে শোবার আগে এক কাপ পরিমাণ গরুর কাঁচা দুধের সঙ্গে আড়াই থেকে তিন গ্রাম অশ্বগন্ধা গুঁড়া মিশিয়ে খেলে চিরতরে স্বপ্নদোষ ও বীর্য পাতলা রোগ ভালো হয়ে যাবে। তবে ঔষধ খাওয়ার সঙ্গে অবশ্যই মন মস্তিষ্ক থেকে কুচিন্তা, হস্তমৈথুন, পর্ন দেখা, অশ্লীল সাহিত্য পাঠ করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে।
আরো পড়ুন : মধু কি কি রোগে কাজ করে
ঔষধ-০২: এক গ্রাম পরিমান অশ্বগন্ধা মূল, এক গ্রাম চালকুমড়া বা সাঁচি কুমড়া, এক গ্রাম শিমুল মূল গুঁড়ো করে ৫ গ্রাম গাওয়া ঘি অথবা ১ কাপ গরুর দুধের সংগে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে স্বপ্নদোষ ও বীর্য পাতলা রোগে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।
শতমূলী : স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধি গাছ
শতমূলী একটি বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এটিকে অনেকটা পানিতে জন্মানো ঝাউ গাছের মতো দেখা যায়। কোন বড় গাছকে আশ্রয় করে এরা বড় হয় এবং বেঁচে থাকে। এ গাছের লতাগুলোতে বাঁকানো কাটা থাকে। মূলের আকৃতি এবং গঠন প্রণালীর উপর ভিত্তি করে এর নামকরণ করা হয়েছে। কারণ এর শিকড়গুলো সরু মুলা অথবা গাজরকে একসঙ্গে তোড়া বেঁধে রাখলে যেমন দেখা যায় শতমূলের শেকরকে সেই রকম দেখা যায়। গাছের পাতাগুলো সরু, দেখতে সুতার মত সেই কারণে কিছুটা দূর থেকে দেখলে পাতাগুলো দেখতে খুব সুন্দর লাগে। এজন্য বাগান বিলাসীরা বাড়ির শোভা বৃদ্ধির জন্য শখ করে ফুল গাছের সঙ্গে শতমূলী গাছ লাগিয়ে থাকেন।
প্রাপ্তিস্থান : বাংলাদেশ ও ভারতের সর্বত্রই শতমূলী গাছ পাওয়া যায়। আমাদের দেশে ছোট বড় বিভিন্ন হাটে বাজারে আয়ুর্বেদিক ভেষজ ঔষধের দোকানগুলোতে শতমূলীর গাছ, পাতা ও এর গুড়ো পাওয়া যায়।
আরো পড়ুন : রসুনের ইতিহাস, সেক্সে রসুনের উপকারিতা কি
শতমূলী গাছ দিয়ে প্রস্তুতকৃত স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধ
৫০ মি.লি শতমূলের রস একটা স্টিলের করাইয়ে দিয়ে তাতে ১০০ মি.লি গাওয়া ঘি দিয়ে হালকা আঁচে জাল দিতে হবে। এই মিশ্রন সকালে ও বিকেলে তিন গ্রাম পরিমান আধা কাপ কুসুম কুসুম গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে স্বপ্নদোষ ও বীর্য পাতলা রোগ সম্পূর্ণ সেরে যাবে। এ ক্ষেত্রেও একটি বিষয় লক্ষ্য রাখা জরুরী যে, এই ঔষধ চলাকালীন সময় কুচিন্তা, হস্তমৈথুন, পর্ন দেখা, অশ্লীল সাহিত্য পাঠ করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে।
উপসংহার: স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধি গাছ
প্রিয় পাঠক, স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধি গাছ সম্পর্কিত এই পোস্টটি পড়ে দীর্ঘদিন হস্তমৈথুন ও স্বপ্নদোষের পরিনতি, অশ্বগন্ধা ও শতমূলী গাছের পরিচয়, এ গাছের প্রাপ্তিস্থান ও এ গাছ দিয়ে প্রস্তুতকৃত স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। তবে মনে রাখবেন, কুচিন্তা, হস্তমৈথুন, পর্ন দেখা, অশ্লীল সাহিত্য পাঠ করা অভ্যাসগুলো ভালো নয়, এই খারাপ অভ্যাসগুলো থেকে বেড়িয়ে আসা স্বাভাবিক যৌন জীবনের জন্য খুবই প্রয়োজন। পোস্টটি ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে সেয়ার করবেন, আর কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
ফ্লোনেস্ট বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url