কি কি করলে রোজা ভেঙ্গে যায় না
রোজা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে আমরা প্রায় সকলেই জানি। কিন্তু কি কি করলে রোজা ভেঙ্গে যায় না বা যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। সেই ব্যাপারেই আজকের এই পোস্ট। পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন আর জেনে নিন কি কি করলে রোজা ভেঙ্গে যায় না সম্পর্কিত কোরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক আলোচনা।
পোস্ট সূচিপত্রকার উপর রোজা রাখা ফরজ
প্রত্যেক মুসলিম বালেগ ব্যক্তির উপর রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজে আইন। মুসলমানদের মধ্যে কেউই রমজান মাসের রোজা ফরজ হওয়া বিষয়ে মতবিরোধ করেন নি। "রোজা" শব্দের অর্থ বিরত থাকা, শরীয়তের পরিভাষায় রোজা হলো রোজার নিয়তে সুবহে সাদিকের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা ভঙ্গকারী জিনিস হতে বা পানাহার থেকে বিরত থাকা।
আল্লাহ তা'য়ালা বলেন,
“হে মুমিনগণ তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার”। (সূরা বাকারা-১৭৩)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, “ইসলাম পাঁচটি খুঁটির উপর রয়েছে। আর সেগুলো হলো, এই কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল, সময়মত সালাত কায়েম করা, যাকাত প্রদান করা, বাইতুল্লাহর হজ্ব করা এবং রমজান মাসে রোজা পালন করা”।
আরো পড়ুন : রোজার নিয়ত সেহরি ও ইফতারের দোয়া
উপরের সংক্ষিপ্ত আলোচনায় কুরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক দেখা গেল যে, রমজান মাসে রোজা পালন করা প্রত্যেকটি মুসলিম বালেগ নর-নারীদের জন্য অবশ্য পালনীয় একটি ইবাদত। আর সঠিকভাবে এই ইবাদতটি করার জন্য এ সম্পর্কে আমাদের জেনে রাখা একান্ত প্রয়োজন। আজকে আমরা জানবো কি কি করলে রোজা ভেঙ্গে যায় না সে সম্পর্কে। আর কথা নয় চলুন শুরু করা যাক।
কি কি করলে রোজা ভেঙ্গে যায় না
মাওলানা শফীকুর রহমান নদভী (রহ.) এর হানাফী মাযহাব অনুযায়ী রচিত আল ফিকহুল মুয়াস্সার গ্রন্থে কি কি করলে রোজা ভেঙ্গে যায় না বা যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। উক্ত গ্রন্থ থেকে যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না তা সংক্ষিপ্ত আকারে নিম্ন তুলে ধরা হলো।
- রোযাদার ভুলবশত আহার করলে রোজা ভেঙ্গে যায় না।
- রোজাদার যখন ভুলবশত পানিয় কিছু পান করে।
- রেজাদার যখন ভুলবশত স্ত্রী সহবাস করে।
- শরীরের যে কোন স্থানে তেল লাগালে।
- চোখে সুরমা লাগালে, গলায় যদিও তার স্বাদ অনুভব করা যায়।
- রোজাদার যখন শিঙা লাগায়।
- রোজাদার কারো গীবত করলে।
- রোযাদার রোজা ভেঙ্গে ফেলার নিয়ত করেছে অথচ রোজা ভাঙে নি।
- রোযাদারের গলায় বা মুখে অনিচ্ছাকৃত ধূলাবালি গেলে, যদি তা কোনো মেশিনের ধূলাও হয়।
- রোযাদারের গলায় অনিচ্ছাকৃত ধোঁয়া চলে গেলে।
- রোযাদারের গলায় কোনভাবে মাছি চলে গেলে।
- জুনুবী অবস্থায় সকাল হলে। এইভাবে যদি অবশিষ্ট পুরো দিন জুনুবী অবস্থায় কাটায় তবুও রোযা নষ্ট হবে না । তবে এটা মাকরূহে তাহরীমি। কারণ (এতে) ফরয নামাজ বর্জন করা হয়।
- রোজাদার নদীতে ডুব দেওয়ায় তার কানে পানি প্রবেশ করলে।
- যখন রোযাদারের নাকে শ্লেষ্মা বা শর্দি আসে, আর সে ইচ্ছাকৃতভাবে তা উপরের দিকে টেনে নেয় অথবা গিলে ফেলে।
- রোযাদারের অনিচ্ছাকৃত বমি হলে এবং নিজের ইচ্ছা ছাড়াই পেটে ফিরে যায়, চাই বমি অল্প হোক বা বেশি হোক।
- যদি রোযাদার মুখ ভর্তির চেয়ে কম বমি করার ইচ্ছা করে এবং স্বেচ্ছাকর্ম ছাড়াই তা পেটে ফিরে যায়।
- রোযাদারের দাঁতে লেগে থাকা কোনো বস্তু ভক্ষণ করলে যদি সে ভক্ষণকৃত বস্তুটি ছোলার চেয়ে ছোট হয়।
- যদি রোযাদার সরষের মতো কোনো বস্তু মুখের বাহির থেকে নিয়ে চাবায় এবং তা বিলীন হয়ে যায় এবং তার গলায় কোনো রকম স্বাদ অনুভব না করে।
- ইনজেকশন দ্বারা রোযা নষ্ট হয় না, চাই তা চামড়াতে প্রবিষ্ট করানো হোক বা | রগে প্রবিষ্ট করানো হোক।
- রোযাদার কোনো কাঠি দ্বারা কান চুলকালে, যার | ফলে কান থেকে ময়লা বের হয় এবং সে সেই কাঠি বার বার কানে প্রবিষ্ট করালে।
আরো পড়ুন : সমুদ্রের ফেনা পরিমান গোনাহ মাফের দোয়া
যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না পিডিএফ ও ছবি
অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন, কিস করলে কি রোজা ভেঙে যায়? রোজা অবস্থায় সহবাস করা যাবে কি? রোজা রেখে স্ত্রীকে চুমু দেওয়া যাবে? রোজা রেখে হস্তমৈথুন করলে রোজা ভেঙ্গে যায় কিনা? অনেকেই এ ধরনের আরো অনেক প্রশ্ন করে থাকেন। রোজা ভেঙ্গে যায় না এমন কাজগুলো কি কি তা আমাদের জেনে রাখা উচিৎ। তাই যারা উপরের প্রশ্নগুলো করে থাকেন তাদের জন্য কি কি করলে রোজা ভেঙ্গে যায় না তার তালিকা করে ছবি বা পিডিএফ আকারে নিন্মে প্রদান করা হলো।
ফ্লোনেস্ট বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url